নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার একটি হত্যা মামলার রায়ে দুই আসামিকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে ৯ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
ডাকাতি ও ডাকাতির মালামাল উদ্ধারের ঘটনায় সব আসামিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় আদালত।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-২ বেগম সাবিনা ইয়াসমিনের আদালত-৬ রোববার দুপুরে আসামিদের উপস্থিতিতে এই রায় দেয়।
ফাঁসির আসামিরা হলেন- তাইজুল ইসলাম ওরফে তাইজুল ফিটার ও মহিউদ্দিন ওরফে মহি ফিটার।
যাবজ্জীবন পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন- চাঁন মিয়া, দুলাল মিয়া, মজিবর, আব্দুল মান্নান ও মো. আরিফ। পলাতক আসামি আব্দুল জলিল, সাইফুল ইসলাম, দুলাল হোসেন ও শফিকুল ইসলাম। তবে ইব্রাহিম নামের এক আসামি মৃত্যুবরণ করায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
অতিরিক্ত সরকারি আইনজীবী কে এম ফজলুর রহমান নিউজবাংলাকে জানান, ২০০৮ সালের ২২ সেপ্টেম্বর শাহপরান বাল্কহেডচালক মো. নাসির, মঙ্গল চন্দ্র, ফয়সাল হোসেন ও আব্দুল হান্নান সিলেট থেকে পাথরবোঝাই করে মুন্সীগঞ্জের সিমেন্ট কারখানায় নিয়ে আসেন। পরবর্তীতে মেঘনা নদীতে বাল্কহেডের ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়।
তা মেরামত করতে মহি ফিটার ও তাইজু ফিটারকে খবর দেয়া হয়। তারা ইঞ্জিন মেরামত শেষে পরীক্ষা করার কথা বলে ইচ্ছা করে বাল্কহেডটি ফতুল্লায় ধলেশ্বরী নদীর বক্তাবলীর চরে থামিয়ে দেয়। পরে বাল্কহেডের চালক-শ্রমিকসহ চারজনকে গলা কেটে হত্যা করে হাত-পা বেঁধে নদীতে ফেলে দেয়।
এর মধ্যে নাসির ও ফয়সালের মরদেহ পাওয়া গেলেও অপর দুইজনের (মঙ্গল ও আব্দুল) মরদেহ পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় ওই বাল্কহেডের মালিক এরশাদ মিয়া ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেন।
ওই মামলায় গ্রেপ্তার সাত আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ২০০৯ সালের ২৬ মার্চ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ১২ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। ১৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত এই রায় দেয়।
আসামিপক্ষের আইনজীবী কার্তিক চন্দ্র দাস নিউজবাংলাকে জানান, আসামিপক্ষ ন্যায়বিচার পায়নি। তারা এই রায়ে সংক্ষুব্ধ হয়েছেন। তারা হাইকোর্টে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।